জাতীয় রাজনীতিতে সিলেটী নেতাদের দাপুটে গোটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গর্বিত ছিলো, গর্বিত ছিলাম আমরাও ‘সিলেটী কর্মী’ হিসেবে। আমাদের গর্বেরধনেরা ছিলেন মরহুম বর্ষীয়ান জননেতা আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদ, দেওয়ান ফরিদ গাজী, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, শাহ্ এ,এস,এম কিবরিয়া এবং অতি সন্নিকটে সুলতান মুহাম্মদ মনসুর। তাঁরা ছিলেন বরেণ্য রাজনীতিবিদ, কুটনীতিক, বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান ও অর্থনীতিবিদ। আহারে! জাতীয় সেই বীর সন্তানেরা এখন প্রয়াত, কেউ ছিটকে বাইরে!

সময়ের সাথে সাথে রাজনীতির প্রেক্ষাপট পরিবর্তিত হয়। পটপরিবর্তনের এই সময়ে কেউ কেউ ছিটকে পড়েন আবার সংগঠনের হাল ধরতে তৎপর নেতারা দায়িত্ব পালন করেন কিংবা পুনরায় দায়িত্ব পান। বলছিলাম এড. মিসবাহ্ সিরাজের কথা। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা বারবার তাঁকে সুযোগ করে দিয়েছিলেন। তিন তিন বার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বিরাট সুযোগ পেয়েও জাতীয় রাজনীতিতে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি কিংবা যেসব সুযোগ পেয়েছিলেন সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ফলে বৃহত্তর সিলেটের আওয়ামী পরিবারের অভিভাবক হওয়ার সুযোগ হারিয়েছেন। জাতীয় রাজনীতি তো দূরের কথা, সিলেট বিভাগে এমনকি সিলেট জেলায়ও নিজেকে তুলে ধরতে পারেননি। এ ব্যর্থতার কারণে তাঁকে ২১তম সম্মেলন শেষ গঠিত নতুন কমিটিতে স্থান দেননি আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সিলেটের রাজনীতি ধরণ দেশের অন্যসব জেলার চেয়ে আলাদা। রাজনীতি কিংবা দেশ পরিচালনা- সব দল কিংবা সরকার সিলেট থেকে যাত্রা শুরু করেন। কিন্তু গত এক যুগ থেকে সিলেটের রাজনীতিতে বিপরীত শ্রোত সহমান। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের হাল ধরার মতো সামাদ, হুমায়ন, সুরঞ্জিতের উত্তোসূরী পাচ্ছে না আওয়ামী লীগ। মিসবাহ সিরাজ জাতীয় নেতার সুযোগ হারিয়েছেন। সামনের চলে এসেছেন জাতীয় নেতা নুরুল ইসলাম নাহিদ। তাঁর নামের সাথে যুক্ত সুনাম যেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির আগামী প্রেক্ষাপট রচনা করে। সিলেটের আওয়ামী রাজনীতি সঠিক পথে পরিচালিত হবে এমনটাই তৃণমূলের প্রত্যাশা।

আমরা পাউন্ড, ডলার আর কাড়িকাড়ি টাকা খরচ হয় নিজেদের মধ্যে ‘গুঁতোগুঁতি’ করা নিয়ে, কে কাকে ‘ল্যাং’ মারবে সেটা নিয়ে সবাই ব্যতিব্যস্ত, অথচ বাস্তবতা জাতীয় রাজনীতিতে এখন সিলেট অনেকটা অন্ধকারে। আমরা কোথাও নাই, না আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ না ছাত্রলীগ। এখন নেতৃত্বের জন্য জেলা কৌটার অপেক্ষা করতে হয়।

তবে আমি আশাবাদী জননেতা নাহিদ ভাইয়ের সাথে প্রিয় নেত্রী নতুন/ তরুণ প্রজন্মের কাউকে অবশ্যই সহযাত্রী করবেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু সাবেক সফল শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এম.পিকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডিয়াম মেম্বার নির্বাচিত করেছেন, সেহেতু সিলেট বিভাগের হাজারো নেতাকর্মীর প্রত্যাশা অনেক গুণ বেড়ে গেছে। কেননা একমাত্র নাহিদ ভাই-ই জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি সিলেট বিভাগের শূন্যতা পূরণ করতে হবে। পুনরুদ্ধার করতে হবে প্রয়াত নেতাদের ঐতিহ্য, আধ্যাত্বিকনগরী সিলেট তথা সিলেট বিভাগের আওয়ামী রাজনীতি সমৃদ্ধ ও সুসংগঠিত হবে জননেতা নুরুল ইসলাম নাহিদের দক্ষ নেতৃত্বে, আমরা কর্মীরা হবো গৌরবান্বিত। জাতীয় রাজনীতিতে উজ্জ্বল নুরুল ইসলাম নাহিদকে বেরিয়ে আসতে হবে চোখে ছানি পড়ার মতো নির্দিষ্ট একটা সার্কেল থেকে। এই সার্কেল বা চক্র নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করতে প্রতিনিয়ত ব্যস্ত থাকে। তারা সচেষ্ট থাকবে নাহিদকে একটি গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ রাখতে – নিজ সীমাবদ্ধতার মধ্যে আগলে রাখতে।

জননেতা নুরুল ইসলাম নাহিদের আছে গৌরব উজ্জল ছাত্র রাজনীতির ইতিহাস, আছে গৌরব উজ্জল গণমানুষের রাজনীতির ইতিহাস। সর্বশেষ আমরা দেখেছি স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তিন জোটের নেতৃত্ব দিতে- তিন জোটের রুপরেখা জাতীর সামনে পেশ করতে।শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে অল্প সময়ে তিনি জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করেছেন। বছরের প্রথম দিনে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দিয়েছেন নতুন বই। বছরের প্রথম দিনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বই উৎসব চালুর রেওয়াজ- আজো বিদ্যামান। আশাকরি এই ধারা আগামীতে অব্যাহত থাকবে। তাঁর নেতৃত্বগুণের কারণে আমরা তৃণমূলের কর্মীরা আশা করতেই পারি ‘নাহিদ ভাই -ই’ সব বেড়াজাল ছিন্নকরে প্রেসিডিয়াম মেম্বার হিসেবে জননেতা নুরুল ইসলাম নাহিদ গোটা সিলেট বিভাগের আওয়ামী পরিবারের অভিভাবক রুপে।

শুভ কামনা শ্রদ্ধেয় নুরুল ইসলাম নাহিদ, যাত্রা শুরু হোক সিলেট বিভাগ আওয়ামী লীগকে নিয়ে, গর্বিত হবে সিলেটবাসী, ফিরে পাবো সামাদ আজাদ_সেন বাবুর ঐতিহ্য, গর্বিত হবো আপনার একজন কর্মী হিসেবে, ‘জয়তু নাহিদ ভাই’।

লেখকঃ সাবেক ছাত্রনেতা : প্রধান শিক্ষক, রাজা জি.সি হাই স্কুল, সিলেট।

এই বিভাগে প্রকাশিত সকল লেখা লেখকের নিজস্ব মতামত। লেখার বিষয়বস্তু ও চিন্তাধারা লেখকের। এর সাথে সম্পাদকের কোন সম্পর্ক নেই। সেজন্য প্রকাশিত লেখার কোন বিষয়ের দায় সম্পাদকের নয়।